৭ই মার্চ রোজ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। আরবি শাওয়াল মাসের মধ্যরাতকেই পবিত্র শবে বরাতের রাত বলা হয়ে থাকে। এই রাতে এবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নফল নামাজ আদায় করে থাকে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখতেন। তিনি বলেছেন শাবান মাসে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতে এবং নফল রোজা রাখতে।
যেহেতু পবিত্র শবে বরাত চলে এসেছে তাই অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ শবে বরাতের রোজা রাখতে চায়। ইতিমধ্যে তারা ইন্টারনেটে শবেবরাত রোজা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে অনেকেই জানতে চেয়েছে যে শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কত তারিখে রোজা রাখতে হবে। তাই আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে পবিত্র শবে বরাতের রোজা কয়টি, শবে বরাতের রোজা কবে ও কিভাবে এই রোজার নিয়ত করতে হয় তা বিস্তারিতভাবে জানাবো।
শবে বরাত রোজা ২০২৪
আমাদের প্রান প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রতি আরবি মাসেই নফল রোজা রাখতেন। মহান আল্লাহ্ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ও সওয়াব লাভের জন্য নফল রোজা রাখা প্রত্যেক মুমিনের উচিৎ। রোজা রাখার বিষয়ে একটি হাদিসে বলা হয়েছে, হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি গোটা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। (তিরমিজি – ১৫৫, ১৫৬, ১৫৯)। সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ। কারণে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ পবিত্র শবে বরাতের দিনে নফল রোজা রেখে থাকেন।
শবে বরাতের রোজা কয়টি
পবিত্র শবে বরাত এর এই ফজিলত ময় দিবস উপলক্ষে অনেক ধর্ম প্রান মুসুল্লিগণ শবে বরাতের বিশেষ রোজা রাখতে চান। তাই তারা ইন্টারনেটে শবে বরাতের রোজা কয়টি তা খুজে থাকেন। সত্যি বলতে শবে বরাতের মোট কয়টি রোজা রাখতে হবে তা নির্দিষ্ট নয়। আপনি আপনার সাধ্য অনুযায়ী যে কয়টি ইচ্ছা নফল রোজা রাখতে পারেন।
পবিত্র হাদিস শরীফে শবে বরাতের রোজার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূল (সঃ) বলেনঃ ১৫ শাবানের রাতে তোমরা নফল ইবাদাত করো এবং পরদিন রোজা রাখো। এই হাদিস দিয়ে শবে বরাতের একটি নফল রোজা রাখা প্রমাণিত হয়। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে যানা যায় আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে তিন দিন তিনটি রোজা রাখতেন। এছাড়াও তিনি মহান আল্লাহ্ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সে হিসেবে শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে। আপনি চাইলে শাবান মাসের ১৩,১৫ ও ১৫ দিনে নফল রোজা রাখতে পারেন।
শবে বরাতের রোজা কবে থেকে
শবে বরাতে অনেক মুসলমানগন বিশেষ রোজা রেখে থাকেন। কারণ পবিত্র শবে বরাতের এবাদত একটি নফল ইবাদত। নফল ইবাদতের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নফল নামাজ আদায় করা এবং এর সাথে নফল রোজা রাখা। ইন্টারনেটে অনেক মুসলমানগণ শবে বরাতের রোজা কবে থেকে তা জানতে চেয়েছে। শবে বরাতের এই বিশেষ রোজা রাখার নির্দিষ্ট কোন দিন বা তারিখ নেই।
তবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ প্রতি আরবি মাসেই তিনটি করে রোজা রাখবেন। তিনি আরবি মাসের মাঝামাঝি সময় অর্থাৎ আরবি ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ এই তিন দিন রোজা রেখে থাকতেন। সুতরাং আপনিও চাইলে পবিত্র সামান মাসে শবে বরাত উপলক্ষে তিনটি রোজা রাখতে পারেন। সাবান মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ অর্থাৎ ইংরেজি মার্চ মাসের ৬, ৭ ও ৮ তারিখ এই তিন দিন রোজা রাখা যেতে পারে।
শবে বরাতের রোজার নিয়ত
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে যে সকল মুসুল্লিগণ রোজা রাখতে চান তারা ইন্টারনেটে শবে বরাতের রোজার নিয়ত খুঁজে বেড়ায়। অনেকেই আবার ইন্টারনেটে শবে বরাতের রোজার নিয়ত বাংলায় খুঁজতেছে। রোজার নিয়ত করার পূর্বে প্রথমে আপনাকে জেনে নিতে হবে মূলত নিয়ত কি। নিয়ত হচ্ছে অন্তরের সিদ্ধান্ত, এর মানে হলো আপনি যে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সেটি নিয়ত। সুতরাং আপনি যখন কোন কাজ করা সংকল্প গ্রহণ করবেন তখনই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে নির্দিষ্ট নিয়মে রোজা রাখার কোন বিধান নেই। তবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পবিত্র শাবান মাসে তিনটি করে রোজা রাখতেন। আপনিও চাইলে শবে বরাত উপলক্ষে তিনটে রোজা রাখতে পারেন। তবে নফল এই রোজা রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন নিয়ত নেই। সুতরাং আপনি যদি ইন্টারনেটে শবে বরাতের রোজার নিয়ত খুঁজে থাকেন তাহলে তা খুঁজে পাবেন না।
শবে বরাত রোজার ফজিলত
শাবান মাস হচ্ছে অত্যন্ত বরকতময় ও মহামান্বিত রাত। মহান আল্লাহ তা’আলা শাওয়াল মাসের মাঝামাঝি সময়ে তার বান্দাদেরকে বিশেষ ক্ষমা করে থাকেন। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মুসলমানদের মাঝে নফল নামাজ ও নফল রোজা রাখার বিধান রয়েছে। যদিও এই ধারণাটি সঠিক নয়। তবে নফল নামাজ ও নফল রোজা রাখা অবশ্যই সওয়াবের কাজ। আপনি চাইলে নফল নামাজ ও রোজা রাখতে পারেন। এতে আপনি মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন।
পবিত্র শবে বরাতের রাতে যত ইবাদত করবেন তত আপনাদের জন্য মঙ্গল হবে। এবং মহান আল্লাহর নিকট অতীতের কাজের জন্য ক্ষমা এবং ভবিষ্যতে পাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য আবেদন করতে হবে। তবেই না আমরা এই রাতকে তাৎপর্যময় করে তুলতে পারব। সুতরাং এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত এবং জিকির করা উচিত, এছাড়াও পরের দিন নফল রোজা রাখা উচিত।
শবে বরাতের রোজার সেহরির শেষ সময়
আরবি শাবান মাসে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে অনেক মুসল্লীগণ নফল রোজা রেখে থাকেন। যেহেতু বর্তমানে আরবি সামান মাস চলিতেছে তাই অনেকেই এই মাসে নফল রোজা রেখে থাকে। ইন্টারনেটে অনেকেই শবে বরাতের রোজার সেহেরীর শেষ সময় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাই আপনাদেরকে জানাতে চাই যে ফজরের ওয়াক্তের আগে অবশ্যই আপনার সেহরি শেষ করতে হবে। মার্চ মাসে ভোর পাঁচটার সময় ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়। সুতরাং আপনি ভোর ৪ টা ৩০ মিনিট এর আগেই আপনারা শবে বরাতের রোজার সেহেরী শেষ করতে পারেন।
সর্বশেষ কথা
মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবং আমাদের গুনাহ মাপের জন্য শবে বরাতের রাতে আমরা নফল নামাজ আদায় করতে পারি। এছাড়াও পরের দিন নফল রোজা রাখতে পারি। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কবে রাখতে হবে তা জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি ইতিমধ্যেই আজকের পোস্টের মাধ্যমে আপনি শবে বরাত রোজা সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও দেখুনঃ
বাংলাদেশে পবিত্র শবে বরাত কবে – শবে বরাতের নামাজ
শবে বরাত পালনের নিয়ম – করণীয় ও বর্জনীয় কাজ
আমি সুজন। আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা পলিটেকনিকে পড়ালেখা করছি। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।